লালমনিরহাট সংবাদদাতা।। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও লালমনিরহাটের আদিতমারীতে জোর পূর্বক দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আলালের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, থানা পুলিশ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেও তিনি কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই কাজ করেই চলেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে ও সরেজমিন গিয়ে জানাগেছে, উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের বড় কমলাবাড়ী মৌজার জে,এল,নং-৭৭,এস,এ খতিয়ান নং-৫০৫,এস,এ দাগ নং-৩৩৪৫,জমির পরিমান-৬৬ শতক জমি দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছেন একই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে এরশাদুল আলম ও রফিকুল আলম নামে দুই ভাই।
এদিকে ওই জমির মালিকানা দাবী করেন কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আলাল (৩৫), ফারুকুল ইসলাম (৩৬), আব্দুল খালেক (৩৮),আব্দুর রাজ্জাক (৪০)সহ আরো কয়েকজন। এঘটনায় রফিকুল আলম বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাহিয়া মামলা দায়ের করেন। যাহার মোকদ্দমা নং-অন্য ১৫৭/২০১৭ (আদিত)। বর্তমানে মামলাটি চলমান রহিয়াছে। আর ওই আবেদনের পর আদালত ওই জমির উপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। যার কপি থানায় অভিযোগের সময় জমা দেন এরশাদুল আলম।
এদিকে গত ৪ এপ্রিল সকালে কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আলাল ও তার লোকজন কমলাবাড়ী ইউনিয়ন কাউন্সিল বাজারে ওই জমিতে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কাজ শুরুর পর এরশাদুলের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিয়া খুন জখমের হুমকি দিয়ে তাড়াইয়া দেয়। পরে এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযোগ দায়েরের একদিন পর সোমবার (৬ এপ্রিল) সকালে আবারো ওই জায়গায় কাজ করার নির্দেন দেন চেয়ারম্যান। পরে আবারও এরশাদুল বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেন। এরপর আদিতমারী থানার ওসি সাইফুল ইসলামের নির্দেশে উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
এদিকে পুলিশ কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আলালকে নোটিশ দিলেও তিনি কাজ বন্ধ না করে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর আবারও কাজ শুরু করেন। বিষয়টি আবারো ওসিকে অবগত করলে ওসি নিজেই বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
অভিযোগকারী এরশাদুল আলম বলেন, বাবার মৃত্যুর পর আমরা ভাইয়েরা ওই জমি দীর্ঘ ৩৮ বছর যাবত ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু আলা উদ্দিন আলাল ও তার লোকজন ওই জমি তাদের দাবী করে হঠাৎ করে জমিতে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
কমলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আলাল ওই জমি ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানা দাবী করে বলেন, দোকান ঘরের গোড়া পাকা করণের কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, আগে থেকে ওই জমি দখলে রয়েছে তাদের। তিনি আরো বলেন, ওই জমিতে আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই,এছাড়াও ওই জমিতে উভয় পক্ষের মামলা রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, কোন ধরনের অপ্রীতির ঘটনা এড়াতে ও এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ রাখতে উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেন দেয়া হয়েছে। এরপরেও যদি কেউই নির্দেশ অমান্য করেন পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।